নাটোরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫

নাটোরে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে শহরের হাফরাস্তা এলাকার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এর সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
নাটোরে আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন শহরের কানাইখালী মহল্লার আফজাল হোসেনের ছেলে রনি মিয়া, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রকি, আব্দুল মজিদের ছেলে সোহান, হাফরাস্তা এলাকার মৃদুল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মিথিলা পারভীন। তাঁদের মধ্যে রনি, রকি ও সোহান ধর্ষণে এবং মৃদুল ও মিথিলা এতে সহযোগিতায় অভিযুক্ত।

নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দীন জানান, ধর্ষণে অভিযুক্ত রনি, রকি ও সোহান শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক কারবারি। তাঁদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর বিনোদপুর থেকে এক দোকান কর্মচারী (২১) তাঁর এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রেমিকাকে নিয়ে নাটোর আসেন বিয়ে করার উদ্দেশ্যে। পরে স্থানীয় এক বন্ধু তাঁদের বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় মৃদুল ও মিথিলা দম্পতির বাসায় নিয়ে যান। এই দম্পতি বাসায় রনি, রকি ও সোহানকে ডেকে নিয়ে আসেন। এ সময় তাঁরা (তিনজন) ওই শিক্ষার্থীকে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে ভুক্তভোগীদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। পরে শিক্ষার্থী ও তাঁর প্রেমিক ছাড়া পেয়ে রাত ১১টার দিকে নাটোর থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।

নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক জামাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযানে নামি। দ্রুতই শহরের হাফরাস্তা থেকে দুই সহযোগী ও নাটোর সদর উপজেলার তেলকুপি নূরানীপাড়া থেকে ধর্ষণে অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করা হয়। ভুক্তভোগীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ’

বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বারহাট্টা থানায় গত রবিবার মামলা করেন। অভিযুক্ত হাফেজ নুর আহম্মদ (৫৭) সিংধার মল্লিকপুর গ্রামের মগল মিয়ার ছেলে ও একটি মসজিদের ইমাম।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুর আহম্মদ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শানারপাড় এলাকায় সপরিবার থাকেন। তাঁর মা থাকেন বারহাট্টার মল্লিকপুরে। মাকে দেখতে মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসেন তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাড়িতে এসে তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন। এ সময় তিনি গ্রামের মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ান। এক পর্যায়ে তিনি ওই নারীকে বিভিন্ন কাজের বাহানায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

গতকাল বারহাট্টা থানার ওসি মোহাম্মদ লুত্ফুল হক বলেন, বেসরকারিভাবে ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই নারী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রমাণিত হয়েছে। সরকারিভাবে পরীক্ষার জন্য তাঁকে বৃহস্পতিবার (আজ) ডাক্তারের কাছে পাঠানো হবে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে গাঢাকা দেওয়ায় তাঁকে ধরা যায়নি।

সিংধা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লালন বখত মজুমদার বলেন, নুর আহম্মদের নারী কেলেঙ্কারির অনেক ঘটনা আছে। তিনি বিদেশে লোকও পাঠান। এই প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিয়ে করার কথা বললেও তিনি ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকায় কিছু লোককে টাকা দিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। এদিন গভীর রাতে গোমস্তাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার পর আসামি মানিরুল ইসলামকে (৪৮) গ্রেপ্তার করা হয়। মানিরুল চৌডালা ইউনিয়নের গুজরঘাট এলাকার মৃত ইয়াসিন আলীর ছেলে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোমস্তাপুর থানার উপপরিদর্শক জাহিদ হাসান বলেন, গতকাল বুধবার বিকেলে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ভুক্তভোগী শিশুটিকে (৮) আদালতে নেওয়া হয়। আসামিকেও আদালতে নেওয়া হয়।